শিরোনাম ২৪, দিনহাটা : তৃনমূল কংগ্রেসের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে খুন হতে
হল গীতালদহ -১ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কে ।
দুষ্কৃতিরা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যেকে পিটিয়ে খুন করা ছারাও তার দুই ছেলে ও স্ত্রী
কে মারধোর করে বলে অভিযোগ । বুধরার রাতে দিনহাটা ১ নং ব্লকের গিতালদহে এই
খুনের ঘটনা ঘটে । খুন হওয়া ওই পঞ্চায়েত সদস্যের নাম আবু
মিঞা (৫৫ ) বলে স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গেছে । দলের দুই গোষ্ঠীর
মধ্যে সংঘর্ষে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে গোটা দিনহাটা । ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে
দিনহাটা থানার গেট আটকে রেখে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াই টা পর্যন্ত বিক্ষোভের
পাসাপাসসি প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাখে তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা । ঘটনায় অভিযুক্তদের
গ্রেপ্তার ও আই সি কে বদলির দাবিতে মৃতদেহ হাসপাতালে রেখেই তৃনমূল কর্মীদের আন্দোলন
কে ঘিরে গোটা মহকুমা জুড়ে উত্তজনের পারদ চড়তে থাকে । খবর পেয়ে রাতেই তৃনমূল
কংগ্রেসের দিনহাটা - ১ ও 2 ব্লক সভাপতি নুর আলম হোসেন
, মীর হুমায়ুন কবীর , বিশু ধর , মিঠুন চক্রবর্তী
, পঙ্কজ মহন্ত , মোসলেম মিয়া , মনোরঞ্জন বর্মণ , আমিনুল হক , আনারুল
হক বাবু প্রমুখ রা হাসপাতালে ছুটে আসে । খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে আসেন
দিনহাটার এস ডি পি ও উমেশ জি খন্ডয়ালের নেতৃতে পুলিশ আধিকারিক রা ।
তৃণমূলের কংগ্রেস দিনহাটা ১ নং ব্লক সভাপতি নুর আলম হোসেন এর নেতৃত্বে
দিনহাটা থানার আই সি র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় । স্থানীয় সুত্রে
জানা গেছে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আবু মিঞা জয়ী
হয় । আসন সংরক্ষন এর জন্য তৃনমূলের এই
পঞ্চায়েত সদস্য এবার নির্বাচনে না দাঁড়াতে পারলেও এবারে তার স্ত্রী
জরিনা বিবি কে দল প্রার্থী করে । মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র
করে গত কিছু দিন ধরে ই তৃনমূলের কংগ্রেস ও যুব সংগঠনের মধ্যে
গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলছিল । এদিন হঠাৎই সেই গন্ডগোল অন্য রুপ নেয় । স্থানীয়দের
কাছে এও জানা গিয়েছে যে, তৃনমূলের দুই পক্ষের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা ও প্রত্যাহার কে
কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে ভিষন উত্তেজনা চলছিল । প্রায়ই দুই পক্ষের বাহিনীকে বাইক মিছিল
করে ফাঁকা গুলি ছোড়া বোমাবাজি করে আতঙ্ক সৃষ্টি লক্ষ্য করা গেছে। এদিন সকাল থেকে এধরনের
ঘটনা চলছিল দুই পক্ষের মধ্যে কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়ে উত্তেজনা গুরুতর হয়ে
ওঠে এবং তৃনমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য আবু মিঞা কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে
খুন করা হয় বলে অভিযোগ । খবর পেয়ে পুলিস সেখানে যায় এবং তাকে
রক্তাত্ব অবস্থায় পুলিস ই দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে
এলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে । এদিন সকালে
দিনহাটার দুই বিধায়ক উদয়ন গুহ , জগদীশ বর্মা বসুনিয়া ছুটে আসেন । দফায় দফায় পুলিশ আধিকারিকদের
সাথে বৈঠক করেন । এই ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবীর পাশাপাশি দিনহাটা
থানার আই সি জহর জ্যোতি রায়ের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয় । তৃনমূল কংগ্রেসের দিনহাটা
– ১ ব্লক সভাপতি নুর আলম হোসেন বলেন অভিযুক্ত দের কয়েক ঘন্টার মধ্যে
গ্রেপ্তার করা না হলে পুলিসের বিরুদ্ধে আন্দলোন চলবে । তৃনমূল যুব কংগ্রেস কর্মীরাই
আবু মিয়াকে খুন করেছে বলে তৃনমূল নেতৃত্ব জানান । তৃনমূল কংগ্রেস
নেতা বিধায়ক উদয়ন গুহ , জগদীশ বর্মা বসুনিয়া বলেন যাদের বাড়ির ঘটনা তারা কয়েক জনের
নামে অভিযোগ জানিয়েছে । উদয়ন গুহ বলেন এই ঘটনার সাথে কেউ সরাসরি জড়িত এবার কেউ কেউ
চক্রান্তের সাথে বা প্ররোচনার সাথে জড়িত । এটা কোন রাজনৈতিক বিষয় নয় । কোন তৃনমূল কংগ্রেস
কর্মীকে কোন তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী খুন করতে পারে না । যারা এটা করেছে তারা সমাজ বিরোধী
। তাদের কোন ক্ষমা নেই বলে উদয়ন গুহ উল্লেখ করেন । দলীয় দুই বিধায়কের আশ্বাসের পর বেলা
আড়াইটা নাগাদ পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ উঠে যায় । এরপর খুন হওয়া তৃনমূল নেতা গ্রাম পঞ্চায়েত
সদস্যের মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয় । এদিন দলের দুই বিধায়ক সহ অন্যান্য নেতারা হাসপাতালে
গেলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মৃত আবু মিয়ার ভাই মোতালেব মিয়া সহ অন্যান্যরা ।
